মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১২ অপরাহ্ন

শীর্ষ সংবাদ :
সংবাদ সম্মেলনে যুবদল নেতা যুবলীগ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে ছাত্র-জনতার উপর হামলা মামলায় বিশ্বম্ভরপুর আ.লীগের সভাপতি সহ ৫ জন কারাগারে অসমর্থ মানুষের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে… জেলা ও দায়রা জজ মাহমুদুল হাসান শাল্লায় বজ্রাঘাতে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু সুনামগঞ্জে ট্রাফিক এর ভূমিকায় ইয়ূথ পিস এম্বাসেডররা দিরাইয়ে বড় ভাইকে না পেয়ে ছোট ভাইকে খুন দিরাইয়ে রাতের আঁধারে ধানের মুটে আগুন  সুনামগঞ্জ সদর ওয়েভ গ্রুপ গঠন শান্তিগঞ্জে মামলার আসামী নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠনের নেতাদের গ্রেপ্তারের না করায় জনমনে উদ্বেগ ছাত্রীদের দাবি আওয়ামী লীগের মন্ত্রীর বাড়ীতে নিরাপত্তায় আছি

সিলেট সুনামগঞ্জ জেলা আইনিজীবি সমিতির নির্বাচন আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়

স্টাফ রিপোর্টার::

সম্প্রতি শেষ হলো সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির নির্বাচন। এ দুই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় রাজনৈতিক মহলে ভাবনার জন্ম দিয়েছে। এ নিয়ে চলছে মূখরোচক আলোচনা। নেতাকর্মীরা বিএনপির আন্তঃকোন্দলকে এর জন্য দায়ী করেছেন।

গত ১৬ জানুয়ারি সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২৬টি পদের মধ্যে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১২টিতে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা জয় পেয়েছেন। এ ছাড়া বিএনপিপন্থী ছয়জন ও জামায়াতপন্থী পাঁচজন জয় পেয়েছেন। বাকিদের মধ্যে একজন জাসদপন্থী ও দুজনের দলীয় পরিচয় জানা যায়নি।

আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনে প্রায় প্রতিটি পদেই বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা অংশ নেন। তবে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তাঁরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন না। এতে বিএনপি ঘরানার প্রার্থীদের দলটির সমর্থক অনেক ভোটার ভোট দেননি। এ অবস্থায় বিএনপিপন্থী বেশির ভাগ আইনজীবী নির্বাচনে পরাজিত হন। তবে আওয়ামী লীগের চলমান দুঃসময়েও দলটির সমর্থক অনেক আইনজীবী জয় পেয়ে আলোচনার জন্ম দেন। যদিও নির্বাচনে জয়ী আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা বলছেন, তাঁরা দলীয় পরিচয়ে কিংবা প্যানেলে নির্বাচন করেননি। দলীয় পরিচয়ে নির্বাচিতও হননি। তাঁরা একক উদ্যোগে প্রার্থী হয়ে জয় পেয়েছেন।

গত ১৯ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতি পদে জিতেছেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবী। বিএনপি সমর্থকরা সভাপতিসহ দুটি পদে জয়ী হয়েছে। সাধারণ সম্পাদকসহ ৯টি পদে জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। এছাড়া দুটি পদে জামায়াতে ইসলামী সমর্থক এবং একটি পদে সিপিবি সমর্থক প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। বাকি দুটি পদে জিতেছেন নির্দলীয় প্রার্থীরা। সভাপতি পদে বিএনপি পেয়েছে ১৭৪ভোট আর সাধারণ সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৫০ ভোট। নির্বাহী সদস্য পদে সর্ব্বোচ্ছ ভোট পেয়েছেন জামায়াত সমর্থক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির (৩২৭ ভোট) এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক মো. সাইদুর রহমান তালুকদার (৩০৯ ভোট) এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপির বিপর্যয়ের কারণে দলটির জেলা ও মহানগরের শীর্ষ চার নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা নোটিশ তাঁদের কাছে পৌঁছেছে।

নোটিশ পাওয়া নেতারা হলেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমেদ চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েছ লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী। তবে সুনামগঞ্জের বিষয়ে এখনো এ ধরনের কোন প্রদক্ষেপ দেখা যায় নি।

নোটিশে বিএনপির শীর্ষ চার নেতাকে বলা হয়, সম্প্রতি সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী প্যানেলকে বিজয়ী করার জন্য জেলা বা মহানগর বিএনপি যথাযথ উদ্যোগ নেয়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উদাসীন ও নির্বিকার ভূমিকার জন্য নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী প্যানেলের বিপর্যয় ঘটে।

দায়িত্বহীনতার কারণে সিলেট বিএনপির চার শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না—সে বিষয়ে একটি লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে অধিকাংশ পদে জয়ী হয়েছে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সমর্থকরা। গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদকের পদটি পেয়েছে তারা। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৩টি সম্পাদকীয় পদে ও নির্বাহী সদস্যের ৫টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৮টি পদে একক প্রার্থী থাকায় তাদেরকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।  সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক,  জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. আব্দুল হক। তিনি পেয়েছেন ১৭৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থক মো. আব্দুল হামিদ ১৩৭ ভোট পান। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী উজ্জ্বল। তিনি পেয়েছেন ২৫০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হুমায়ুন কবীর পান ১৩১ ভোট। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এ এস এম মাহবুবুল হাছান তালুকদার শাহীন। তিনি পেয়েছেন ১৮৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. আবুল বাশার ১৭৬ ভোট পান। নির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন জামায়াত সমর্থক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির (৩২৭ ভোট), আওয়ামী লীগ সমর্থক মো. সাইদুর রহমান তালুকদার (৩০৯ ভোট), স্বতন্ত্র মো. জুলহাস মিয়া (২৭২ ভোট), সিপিবি সমর্থক মো. আফিজ মিয়া (২৫৪ ভোট), স্বতন্ত্র রজত কান্তি সরকার (২৩৬ভোট)। 

বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিনিয়র সহ সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের  আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. আজাদুল ইসলাম, সহ সভাপতি বিএনপি সমর্থক মো. আবু বকর, সহ সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সমর্থক জুবায়ের আবেদীন, অর্থ সম্পাদক জামায়াত সমর্থক  মোহাম্মদ মহসিন রেজা, পাঠাগার সম্পাদক আওয়ামী লীগ সমর্থক মুশফিকুর রহমান পীর, সমাজ কল্যাণ ও ক্রীড়া সম্পাদক আওয়ামী লীগ সমর্থক ফরহাদ উদ্দিন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ সমর্থক মো. আকিক মিয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আওয়ামী লীগ সমর্থক ফাতেমা আক্তার রেখা। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিজয়ী হওয়া সুযোগ দেওয়া নিয়ে ও অনেক মূখরোচক আলোচনা রয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছইল মিয়া বলেন, “অত্যন্ত সুশৃঙ্খল পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৪৫২ ভোটারের মধ্যে ৩৮৮ জন ভোটার তাদের ভোট দিয়েছেন। আটটি সম্পাদকীয় পদে একক প্রার্থী থাকায় তাদেরকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2025 surmapostnewsbd.com
Design & Developed BY Ohhre Technologies Limited.