মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার::
জেলা কাবিটা বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সাথে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ২৫ জানুয়ারি সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সুনআমগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। শুরুতেই ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অগ্রগতি ও বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরা হয়। জেলার ১২টি উপজেলায় মোট ৬৮৬টি বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে স্কীম তৈরি করা হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অগ্রগতি প্রতিবেদন এর সাথে দ্বিমত পোষণ করেন সাংবাদিকরা। এ সময় তারা বলেন মাঠের বাস্থবতা এবং রিপোর্ট এ মিল নেই। এ জন্যেই মানুষ বলে হাওরের মাটি কলমে কাটে। সাংবাদিক হারের সঠিক চিত্র সভায় তুলে ধরেন।
শুরুতেই মনিটরিং কমিটির এক সদস্য বলেন, ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মধ্য জানুয়ারিতে গিয়েও দেখা যায় কাজ শুরু হয়নি। এবছর হাওর ডুবি হলে কমিটির সবাইকে জেলে যেতে হবে। আমি প্রস্তুত আছি। আমি মনে করেছিলাম জুলাই বিপ্লবের পর আমরা সংশোধন হবো কিন্তু দেখলাম এর বিপরিত। এবার বাঁধের নামে দুর্নীতি বেশী হয়েছে। দেশে রাজনৈতিক সরকার না থাকলেও দলীয় পরিচয়ে পিআইসি বন্টন হয়েছে। এ দায় প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলকে ও নিত হবে।
জামালগঞ্জের পাখনার হাওরে জলাবদ্ধতার জন্য কৃষকরা ধান রোপন করতে পারছেন না এ বিষয়ে পাউবোর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা সুষ্ঠু জবাব দিতে পারেন নি। এ সময় সাংবাদিকরা দাবি করেন, যেহেতেু হাওরে ধান রোপনই করা যাচ্ছে না তাহলে হাওর রক্ষার জন্য কোটি টাকার প্রকল্প কেন। এসব প্রকল্প বন্ধ রাখার দাবি জানানো হয়।
সভায় বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সুনামগঞ্জ প্রতি ৩ বৎসর অন্তর অন্তর বন্যায় আশঙ্কা থাকে বিধায় এই অঞ্চলের ৯০ ভাগ মানুষের জীবিকার একমাত্র উপলক্ষ্য বোরো ফসল সুরক্ষায় ২০১৭ সালের পর থেকেই হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু প্রতি বছরই শত কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক দূর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও মোট ৬৮৬টি বাঁধের বিপরীতে ১২৬ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
২৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও যথাসময়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় মাটির অভাবে এখনো অনেক বাঁধের কাজ শুরুই করা যাচ্ছে না এমন কথাই জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও নির্বাহী কর্মকর্তা। আবার গত বছরের বাঁধের কাজের টাকা এখনো না পাওয়া ও কোন কোন বাঁধে বরাদ্দ কম হওয়ায় অনেক পিআইসি কাজ করতে আগ্রহ হারানোর কারণ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
সভায় জেলা প্রশাসক জানান, আগামী শনিবারের মধ্যে কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা এখন থেকে বাঁধে থাকবো। নিয়মিত আপডেট জানাতে হবে।
তিনি আরো বলেন, অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জ ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে। বাঁধের কাজে ধীরগতি কোন ভাবেই সহ্য করা হবেনা। আমি সুনামগঞ্জে ৪/৫ মাসের মত হয় এসেছি। এখানকার পরিবেশ প্রতিবেশ সম্পর্কে আমার তেমন ধারণা নাই। এ কাজে যাদের অভিজ্ঞতা আছে আমি তাদের সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। সঠিক ভাবে আর দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে।তিনি দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলেন, আপনি যেহেতু শাল্লাতেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন তাই গুরুত্ব দিয়ে কাজ তুলতে হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কান্তি পাল, নির্বাহী প্রকৌশলী পওর-১, সুনামগঞ্জ মো. মামুন হাওলাদার, নির্বাহী প্রকৌশলী পওর-২, সুনামগঞ্জ মো. ইমদাদুল হক, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এড. মো. মল্লিক মঈন উদ্দিন আহমদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. শেরে নুর আলী, ১২ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দসহ মনিটরিং কমিটির সদস্যবৃন্দ ও প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।