মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার::
হাওরের বোরো ফসলরক্ষা বাঁধের নির্মাণ ও সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার আর মাত্র ১৪ দিন বাকি। ১৫ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও হাওরের চিত্র ভিন্ন। বিভিন্ন বাঁধে গিয়ে দেখা যায় এখনো মাটির কাজই শেষ হয়নি আবার কিছু বাঁধে মাটির কাজ শুরুই হয়নি। বিশেষ করে ক্লোজারগুলোর কাজ শেষ না হওয়ায় শঙ্কা দেখা দিয়েছে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে।
১৫ ডিসেম্বর জেলাব্যাপী বাঁধ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কাংলার হাওরের ১নং প্রকল্পে বাঁধের উপরে মাটি ফেলে বাঁধ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রেজাউল করিম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অতীশ দর্শী চাকমা, রঙ্গারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাইসহ প্রকল্প বাস্তবায়নে থাকা অন্যান্য লোকজন। এভাবে প্রতি উপজেলাই কিছু বাঁধের উদ্বাধন করা হয় কিন্তু এখন পর্যন্ত সে বাঁ গুলোর কাজও শেষ হয়নি। অফিবেযাগ রয়েছ ফেব্রুয়ারি মাসেও বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে তাহলের সেগুলো শেষ হবে কবে?
দিরাই উপজেলার করিমপুর ও জগদল ইউনিয়নের বিভিন্ন বাঁধ পরিদর্শন করে অভিযৈাগের সত্যতা পাওয়া যায়। জগদল ইউনিয়নের চাপতির হাওরের ৮ নং পিআইসিতে গিয়ে দেখা যায় এখন ও মাটির কাজ শুরু হয়নি। তবে ক্লোজারের নিছে কিছু মাটির আলামত পাওয়া যায়। বাঁধের কাজের সাথে জড়িত কাউকে বাঁধে পাওয়া যায়নি।
বেহাল অবস্থা ৭ নং পিআইসির। এখানে এলাপাতাড়ি ভাবে মাটি ফেলে রাখা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও মাটি ফেলাও হয়নি। এমন বড়বড় মাটির চাকা বাঁধে ফেলা হচ্ছে তাতে কাজের গুণগত মান যে রক্ষা হচ্ছে না তা দেখলেই বুঝা যায়। এ পিআইসি তে সাইনবোর্ড ও ব্যবহার করা হয়নি।
৭ নং পিআইসির সভাপতির সাথে বাঁধে দেখা হয় সাইন বোর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সাইন বোর্ড দিরাই আছে সময় করে নিয়ে আসবো। বাঁধের কাজ করে শুরু করেছেন বা কবে শেষ করবেন বললে, তিনি জানান জানুয়ারির ২৩ তারিখ শুরু হয়েছে ফেব্রুয়ারির ২৬ তারিখ শেষ হবে। মাটির কাজই শেষ হয়নি তাহলে এত কম সময়ে কিভাবে শেষ করবেন, বাঁধে কোন কমপেকশন করা হচ্ছে না কেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, মাটির ভরাটের পর রাতে বাঁধে মাটি ঠিক করা হবে।
হুরামন্দিরা হাওরের ৬২ নং পিআইসিতে গিয়ে দেখা যায়, মাটির কাজ ভালই হয়েছে তবে কোন কমপেকশন করা হয়নি। এলোমেলো ভাবে মাটি ফেলে রাখা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষকরা জানান, পিআইসির লোক বৃষ্টির অপেক্ষা করছেন এর জর্ন্য তারা ক্লোজারের কাজ শেষ করছেন না বৃষ্টি হলেই ইমারজেন্সি ওয়ার্ক দেখিয়ে বাজেট বাড়ানো হবে।
বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিকে দায়ী করছেন কৃষক নেতারা। হাওর বাঁচাও আন্দোলনের’ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, শুরুতে কাজের গতি থাকে কম, শেষ দিকে শুরু হয় তাড়াহুড়া। এতে কাজের মান ঠিক থাকে না। কাজে নানা অনিয়ম–অবহেলার কারণেই হাওরের ফসল ঝুঁকিতে পড়ে। আমরা সঠিক সময়ে কাজ শুরু এবং সঠিক সময়ে শেষ করার দাবি বার বার জানাচ্ছি কিন্তু কেউ আমাদের কথা শুনছে না। আমরা প্রতি বছর পিআইসির বিরুদ্ধে মামলা করি এবার সঠিক সময়ে কাজ শেষ না হলে মনিটরিং কমিটির বিরুদ্ধে আদালতে যাবো।