মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন
দিরাই প্রতিনিধি::
‘ফাগুন মাসের প্রথম মঙ্গলবার, মা বলেছেন জন্ম আমার’- গান বেঁধেই নিজের জন্মদিনটা মনে রেখেছিলেন কিংবদন্তি বাউল কবি শাহ আব্দুল করিম। সেই ধারাবাহিকতায় বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১০৯তম জন্মদিন আজ।
শাহ আবদুল করিম ইব্রাহিম আলী ও নাইওরজানের ঘরে ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি খুব ছোটবেলায় তার গুরু বাউল শাহ ইব্রাহিম মাস্তান বকশ থেকে সঙ্গীতের প্রাথমিক শিক্ষা নেন। শৈশব থেকেই একতারা ছিল তার সঙ্গী। জীবন কেটেছে সাদাসিধেভাবে।
‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’, ‘কেন পিরিতি বাড়াইলা রে বন্ধু ছেড়ে যাইবা যদি’–এমন অসংখ্য জনপ্রিয় গানের রচয়িতা শাহ আবদুল করিম। শাহ আব্দুল করিম বাংলার লোকজ সংগীতের ধারাকে আত্মস্থ করেছেন অনায়াসে। ভাটি অঞ্চলের সুখ-দুঃখ তুলে এনেছেন গানে। ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ-প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তাঁর গান কথা বলে সব অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে।
গানে গানে তিনি অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে লড়াই করেছেন ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে। মৌলবাদীদের হাতে নানা লাঞ্ছনারও শিকার হয়েছিলেন এই বাউল। তিনি গানের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন ফকির লালন শাহ, পাঞ্জু শাহ ও দুদ্দু শাহর দর্শন থেকে। তিনি লিখেছেন ও সুর দিয়েছেন এক হাজার ৬০০-এর বেশি গান।
২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন ভাটির এই গুণী মানুষ। তাঁর মৃত্যুর কয়েক বছর আগে বেশ কয়েকজন শিল্পী বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এতে তিনি বাংলাদেশ নয় বাংলা ভাষাভাষী পৃথিবীর মানুষের কাছে পরিচিতি লাভ করেন। পেয়েছেন একুশে পদক।
বাউল শাহ আবদুল করিমের জন্মদিন উপলক্ষে উজানধলের বাড়িতে আজ দুপুরে মিলাদ মাহফিল, শিরনি বিতরণ; সন্ধ্যার পর বসবে বাউল আসর।