মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার::
হাওরের বোরো ফসলরক্ষা বাঁধের নির্মাণ ও সংস্কার কাজের নির্ধারিত সময় আজ শেষ হয়েছে। তবে বেঁধে দেওয়ার সময়ের মধ্যে দিরাই-শাল্লায় ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ সম্পন্ন হয় নি। এ কারণে অকাল বন্যার আশংকায় ফসল হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার অন্যতম দিরাই ও শাল্লা উপজেলার হাওরে এখনও কয়েকটি বাঁধ এবং ক্লোজারে মাটির কাজ শেষ হয় নি। শাল্লা উপজেলার ভান্ডা বিল হাওরের ৭২ নং পিআইসিতে গিয়ে দেখা যায় মাত্র মাটির কাজ চলছে। ৬০-৬৫ ভাগ মাটির কাজ হয়ছে। এ প্রকল্পের সভাপতি হয়েছে হারাধন দাস। প্রকল্প এলাকায় বকেটি মেশিন দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। মনে হচ্ছে বাঁধ দেখতে লোক যাবে এমন সংবাদে আজ কাজ চলছে। এ প্রকল্পে বাজেট রয়েছে ১৭ লাখ ৯২ হাজার ৮শ ত্রিশ টাকা। এখনো মাটির কাজই শেষ হয়নি। কবে কমপেকশন এবং ঘাসের কাজ হবে কেউ জানে না।
সভাপতির কাছে পরিদর্শণ খাতা চাইলে তিনি বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। খাতায় কেউ কিছু লিখেন নি মনে হচ্ছে এ বাঁধ কেউ পরিদর্শণ করেন নি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা পরিষদ সদস্য নূরুল হক আফিন্দী আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি কার্যাদেশ অনুযায়ী বাঁধের কাজের শেষ দিনে দিরাই ও শাল্লা উপজেলার বিভিন্ন বাঁধ পরিদর্শণ করে হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বাঁধ পরিদর্শণে আসলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তাকে তার সাথে বা বাঁধে দেখা যায় নি। তিনি বলেন, আজকে কাজ দেখে আমি হতাশ। কাজের যেমনি ধীরগতি তেমনি গুণগত মান ও অনেক থারাপ বিষয়টি নিয়ে আমি আমাদের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মহোদয়কে অবহীত করবো। পিআইসির লোকদের কাজ শেষ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি তবে আমার সাথে পাউবো কর্মকর্তারা থাকলে কাজের এমন অবস্তা কেন তাদের কাছে জানতে পারতাম।
শাল্লা উপজেলার ফয়জুল্লাপুর ৮৫ ও ৮৬ নং বাঁধে গিয়ে দেখা যায় কিছু শ্রমিক ঘাস লাগানোর কাজ করছে। তবে এ বাঁধের সামেন গত বছরের যে বাঁধ ছিল তার মাটি কেটে বাঁধে ব্যাবহার করা হয়েছে এমন কি নদীর পার কেটে বাঁধে মাটি দেওয়ায় বাঁধ দুটি হুমকির মুখে আছে। নদীতে পানি আসলে এ বাঁধে চাপ বেশি পরবে।
দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের ৫৮ নং পিআইসি দায়িত্বে রয়েছে শাল্লা পাউবো। এ বাঁধের কাজের অবস্থা সবচেয়ে বেশী খারাপ এ বাঁধে মাত্র মাটির কাজ শুরু হয়েছে।
৫৮ নং পিআইসির সভাপতি মজনু মিয়া এ বাঁধে বাজেট রাখা হয়েছে২৪ লাখ ৮৪ হাজার ২শত ষোল টাকা। পিআইসি এলাকায় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। কোন শ্রমিক বা মেশিন কাজ করছে না। নামে মাত্র কিছু মাটি ফেলে রাখা হয়েছে বাঁধে। কৃষকরা জানিয়েছেন বরাম হাওরের খরাপার ক্লোজারটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কিন্তু এখনো কাজ শেষ না করায় আশংঙ্কায় আছেন কৃষকরা।
পিআইসি সভাপতির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান তিনি নামাজে আছেন বাঁধ এলাকায় শ্রমিকরা কাজ করছে। আমরা বাঁধে আছি জানালে তিনি বলেন শ্রমিকরা হয়ত খাইতে গেছে। উনার বাড়ী থেকে বাঁধ অনেকটা দূর হওয়ায় তিনি খাতা নিয়ে দিরাই উপজেলার ধল বাজারে আসেন। খাতায় খোলে দেখা যায়, পরিদর্শণ নোটের অভাব নেই কিন্তু বাস্থবে বাঁধে সে পরিমান কাজ হয়নি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা পরিষদ সদস্য নূরুল হক আফিন্দী তার নোটে লিখেন, অদ্য ২৮ ফেব্রুয়ারি কার্নিদেশ অনুযায়ী বাঁধেয় কাজ শেষ দিনে পিআইসি নং ৫৮ সাইটে গিয়ে পরির্দশণ করি। দেখা যায় ৫০% মাটির কাজ হয়েছে কিন্তু সাইটে শ্রমিক নেই পিআইসি এলাকায় কোন শ্রমিক বা পিআইসি সভাপতি বা সম্পাদক সাইটে নেট। ক্লোজারটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও বাঁধটিতে দায়সার মাটি ফেলে রাখা হয়েছে। যে ভাবে মাটি ফেলে রাখা হয়েছে ্েকেটু বৃষ্টি হলেই মাটি নদীতে নেমে যাবে।বাঁধে মাটির কাজ শেখ করতে আরো ৭-৮ দিন প্রয়োজন। রেজিস্টারে দেখা যাক অনেকে বাঁধ এলাকা পরিদর্শণ করেছেন সে পরিমান কাজ হাইনি। মনিটরিং কমিটির গাফলতির কারণে এ কাজের এ অবস্থা। তিনি বলেন, আজ পাউবোর কোন কর্মকর্তা বাঁধে থাকলে তার কাছে আসল কারণ জানতে পারতাম। তিনি এ বা্ঁধ পরিদর্শণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।