মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০০ পূর্বাহ্ন
শাল্লা প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের শাল্লায় যুবলীগ নেতার নির্দেশে বাজারের তিনটি ভিট দখলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার নাম রতন চন্দ্র দাশ (৪২)। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ২নং হবিবপুর ইউনিয়নের শাসখাই বাজারে।
স্থানীয়রা জানান, ওই যুবলীগ নেতা এখনো স্থানীয় প্রভাব কাটিয়ে শাসখাই গ্রামের প্রভাবশালী গ্রাম্য মাতাব্বর সচীপদ দাস সহ আরো বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীকে সঙ্গে নিয়ে অন্যের নামে বন্দোবস্ত রেকর্ডীয় তিনটি ভিটে রতন চন্দ্র দাশের নির্দেশে জোরপূর্বক ঘর তৈরি করে প্রভাবশালীরা দখলে নিয়ে যায়।
জানা যায় তিনটি ভিটের বিক্রয়মূল্য প্রায় ত্রিশলক্ষ টাকা। সরেজমিনে গিয়ে ও কাগজপত্র দেখে জানা যায়, দত্তপাড়া মৌজার ১০২৯ খতিয়ানের, ২৯ জেল নং এর ৪২৮ দাগ নাম্বারের ৩ শতক জায়গা সহ সরকার এক একর জায়গা বন্দবস্ত দেয় স্থানীয় বাসিন্দা মনমোহন দাসকে। কিন্তু যুবলীগ নেতা রতন চন্দ্র দাশের স্থানীয় প্রভাবে সেই জায়গা আর দখল বুঝে নিতে পারেন নি মনমোহন দাস। অবশেষে গত বছর মনমোহন দাস মারা যাওয়ায় সেই জায়গা আর কোনভাবেই দখলে নিতে পারেন নি তার ছেলেরা। তাই অনেকটাই নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকর্মী কমিশনার ভূমি বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত মনমোহন দাসের ছেলে দীগেন্দ্র চন্দ্র দাস।
লিখিত অভিযোগে দীগেন্দ্র চন্দ্র দাস উল্লেখ করেন, বন্দোবস্ত মালিক সূত্রে গত নয় বছর যাবত উল্লেখিত তফসিল বর্ণিত ভূমিতে ভেগদখল করে আসছি। কিন্তু যুবলীগ নেতা রতন চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে শাসখাই গ্রামের সচীপদ দাস, বুঝলাল দাস, জ্ঞান রঞ্জন দাশ, হরিলাল দাস সহ আরো ৭-৮ জন প্রভাবশালী জোরপূর্বক দীগেন্দ্র চন্দ্র দাসের ভূমিতে রাতের আধারে রাতারাতি ঘর বানিয়ে ফেলে। বাদী দীগেন্দ্র চন্দ্র দাস বাঁধা দিলে নামাংকিত বিবাদীগং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উল্টো প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়,পাঁচ গ্রামের গন্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে পঞ্চায়েতের ব্যবস্থা করিলে রতন চন্দ্র গংরা অভিযোগকারীর উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উটে। এবিষয়ে দীগেন্দ্র চন্দ্র দাস আরো জানান, কাগজ সূত্রে এই জায়গার মালিক আমার বাবা। কিন্তু যুবলীগ নেতা রতন চন্দ্র দাস এখনো স্থানীয় প্রভাব কাটিয়ে একই গ্রামের সচীপদ দাস সহ আরো কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারনে আমরা দখলে যেতে পারছি না। নিরুপায় হয়ে আইনের দারস্থ হয়েছি।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত রতন চন্দ্র দাস বলেন,আমরার নিজের জায়গায় ঘর বানাইছি। জায়গার কাগজপত্র আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন এতো কথা কওয়া যাইতো না। যেটা খুশি সেটা লিখতে পারেন। তিনি বলেন, অভিযোগ দিয়েও কিচ্ছু করতে পারেনি। আমি আমার জায়গায় ঘর বানাইছি এতো জবাবদিহিতার কি আছে। একপর্যায়ে তিনি এই প্রতিবেদকের সাথে বাজে ভাষায় কথা বলেন।
এদিকে একই বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি সচীপদ দাস দিয়েছেন ভিন্ন বক্তব্য। তিনি বলেন জায়গাটির মালিক সৈকত দাস। সৈকত দাস আমাদেরকে দান করে দিয়েছেন। তিনি অভিযোগের বিষয়ে কিছু জানেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমি (ভারপ্রাপ্ত) পিয়াস চন্দ্র দাস বলেন, এসিল্যান্ড অফিস থেকে লোক পাঠিয়েছিলাম। যখন বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছিল তখনতো সরকার সেই জায়গা বুঝিয়ে দিয়েছে। এখন যদি কোন সমস্যা হয় সেটা দেখবে আদালত। এবং স্থানীয়ভাবেও এর সমাধান করা যেতে পারে।