মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৬:২৩ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যোগে ১৪০ তম মহান মে দিবস পালিত
সুনামগঞ্জে বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যোগে ১৪০ তম মহান মে দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। মহান মে দিবস উপলক্ষে সকাল ৯ টায় রায়পাড়াস্থ সংগঠনের আস্থায়ী কার্যালয়ের সম্মুখে বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ খণ্ড খণ্ড মিছিলসহকারে সমেবেত হন। সমাবরশস্থলে উপস্থিত হন সুনামগঞ্জ জেলা হোটেল রেষ্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা স মিল শ্রমিক সংঘের নেতৃবৃন্দ, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা রিক্সা ভ্যান শ্রমিক সংঘের নেতৃবৃন্দ, সুনামগঞ্জ জেলা বারকি শ্রমিক সংঘের নেতৃবৃন্দ, সুনামগঞ্জ জেলা হকার্স শ্রমিক সংঘের কর্মী ও নেতৃবৃন্দ, সুনামগঞ্জ ক্ষৌরকার সমিতির কর্মী ও নেতৃবৃন্দ, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেতৃবৃন্দ,
সকাল ৯ টায় জমায়েতস্থলে গণসংগীত পরিবেশন করেন ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ সুনামগঞ্জ জেলার শিল্পীবৃন্ধ।
এরপর বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের নেতৃত্বে লাল পতাকা সহ এক বর্নাঢ্যর্যালি সুনামগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় আলফাত উদ্দিন চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয় । বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি সুখেন্দু তালুকদার মিন্টুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম ছদরুলের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান আথিতি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির, বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি এডভোকেট নিরঞ্জন তালুকদার, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি সৌরভ ভূষন দেব,গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি দিপ্তি সরকার,স মিল শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক মনির মিয়া, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা রিক্সা ভ্যান শ্রমিক সংঘের সভাপতি আব্দুর রউফ,হোটেল রেষ্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারি শ্রমিক ইউনিয়নের লিলু মিয়া প্রমূখ।
বক্তারা বলেন ১৮৮৬ সাল ও তার পূর্ববর্তী সময়ের শ্রমিকদের ধারাবাহিক সংগ্রাম, ধর্মঘট আর বুকের তাজা রক্তঝরা লড়াইয়ের ফলশ্রæতিতে শ্রমিকশ্রেণির সামাজিক স্বীকৃতি এবং বিশ্বব্যাপী ৮ ঘন্টা কাজ, ৮ ঘন্টা বিনোদন ও ৮ ঘন্টা বিশ্রামের দাবিতে প্রতিষ্ঠিত হয় মহান মে দিবস। মে দিবস হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণির চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে শোষনমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করার দিন। এই দিনে শ্রমিক শ্রেণির সংহতি সংগ্রাম ও শপথের দিন। মে দিবস হচ্ছে রক্ত পিচ্ছিল আঁকাবাকা পথ ধরে অর্জিত শ্রমিকশ্রেণির নিজস্ব দিবস। রক্তে রঞ্জিত এই দিনের চেতনা ভুলিয়ে দিতে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল আপোসকামী সুবিধাবাদীরা মালিক শ্রমিক একতার কথা বলে মে দিবসের তাৎপর্যকে বিভ্রান্ত করে চলছে। এবারও মে দিবসে সরকার মালিক শ্রমিক একতার কথা বলে মূলত শ্রমিক শ্রেণির প্রকৃত মুক্তির সংগ্রামকে আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত মালিক-শ্রমিক তার শ্রেণিগত অবস্থানের কারণে কখনো এক হতে পারেনা। তাই মে দিবসের অজেয় শিক্ষাকে উর্দ্ধে তুলে ধরে মে দিবসের বিপ্লবী চেতনাকে ধারণ করে মজুরি দাসত্ব উচ্ছেদ করে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার দৃপ্ত শপথ নিয়ে আগামী দিনের শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ের আন্দোলনের পাশাপাশি সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রাম অগ্রসর করতে হবে।
নয়াউপনিবেশিক, আধাসামন্তবাদী বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক ও রণনীতিগত সামগ্রিক গুরুত্বের প্রেক্ষিতে মার্কিনের নেতৃত্বে পাশ্চাত্য ও প্রতিপক্ষ চীন-রাশিয়া বাংলাদেশকে স্ব স্ব পক্ষের যুদ্ধে সম্পৃক্ত করতে ষড়যন্ত্র চক্রান্তে লিপ্ত। এ প্রেক্ষিতে দালাল স্বৈরাচারী খুনি শেখ হাসিনাকে ৫ আগস্টে শহুরে ছাত্র-মধ্যবিত্তদের গণআন্দোলনে পট পরিবর্তণে ক্ষমতায় আনে মার্কিনের বিশ্বস্ত দালাল ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে। এর ফলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অবস্থান অগ্রসর হয়, প্রতিপক্ষ চীন রাশিয়া স্বীয় অবস্থান ধরে রাখতে সচেষ্ট থাকে এবং সাম্রাজ্যবাদের দালাল ভারতের অবস্থান দূর্বল ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এই সরকার ক্ষমতায় এসে খুনি শেখ হাসিনা সরকারের আমলের শ্বেতপত্র প্রকাশ করে ৭২-এর সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করে যে তৎপরতা চালাচ্ছে তা মার্কিন পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করবে। এতে দেশ, জাতি ও জনগণের কোন লাভ হবে না। এবার মে দিবস এমন এক সময়ে পালিত হচ্ছে যখন সরকার মায়ানমারকে মানবিক করিডোর প্রদানের চুক্তি করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার পাঁয়তারা চলছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলন সংগ্রাম ব্যতিত কোনো অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না তাই সকল শ্রমিকদের আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে তার অধিকার আদায়ের সংগ্রাম অগ্রসর করে নিতে হবে।