বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০২ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার::
দিরাই উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করেছে দিরাই উপজেলা বিএনপি। দিরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর হোসেন এবং প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মঈন উদ্দিন চৌধুরী মাসুক এ কমিটি অনুমোদন দেন। কমিটি অনুমোদনের পর থেকেই বিভিন্ন ইউনিয়নের ১১ সদস্যের কমিটিতে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের লোকজেনকে পদ দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগ তুলেছেন অনেক ত্যাগী নেতা কর্মী।
কমিটি প্রকাশের পর থেকে যারা বিএনপির কমিটিতে পদ পেয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে তাদের অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরাল করছেন অনেকে। এমন অনেক ছবি এ প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌছেছে।
কমিটিগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রাজানগর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির ভোট ব্যাংক হলেও এ ওয়ার্ডে কোন সদস্য রাখা হয়নি। ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে ২ জন্য এবং ৮ নং ওয়ার্ড ২ জন রাখা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, রাজানগর ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক দোলোয়ার হোসেন ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। গত ১৫ বছর দলের সাথে তার সম্পর্ক ছিল না। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়ের নির্বাচনী কাজে উপস্থিত থেকেছেন। রাজানগর ইউনিয়ন আহ্বায়ক কমিটির ১ম সদস্য শাহিনুর ইসলাম জিবাতুল গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ড্রামী প্রার্থী সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আজাদুল ইসলাম রতনের সকল নির্বাচনী কাজে অংশ নিয়েছেন। কমিটির ১০ নং সদস্য করা হয়েছে সৈয়দ মনসুর আলম কে। রাজানগর ইউনিয়ন বিএনপির কোন নেতা কর্মী উনাকে চেনেননা। তিনি কখনো বিএনপির কোন সভা, সমাবেশ, মিছিল বা মিটিং এ আসেননি। তার সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহ আওয়ামী লীগের একাধিক মন্ত্রীর সাথে ছবি রয়েছে। এ নিয়ে ইউনিয়ন ব্যাপী ব্যাপক আলোচনা রয়েছে এদের কে আবিস্কার করেছে এমন প্রশ্ন করছেন গত আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নেওয়া অনেকে।



আতিকুর রহমান শিহাব নামে একজন সদস্য দুই জন দাবি করছেন এটা তার পদ। দুজনই যুগ্ম আহ্বায়খ পদে আবেদন করেছিলে। প্রকাশিত কমিটিতে এ নামের সাথে যে ফোন নাম্বার ব্যাবহার করা হয়েছে, সে নাম্বারে ফোন দিলে দেখা যায় উনার বাড়ী ইউনিয়নের কালীনগর গ্রামে। তিনি জানান আমার বাবা দীর্ঘ দিন রাজানগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছিলেন। আজকের কমিটিতে আমাকে মূল্যায়ন করায় দিরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সকল সদস্যকে অভিনন্দন জানাই।
সরমঙ্গল ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াহিদ আলীও আওয়ামী লীগের রাজীনিতর সাথে জড়িত। দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়ের সাথে বিভিন্ন প্রোগ্রামে তার ছবি রয়েছে।

রফিনগর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৬ নং সদস্য আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। আওয়ামী লীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদকের সাথে একাধিক ছবি রয়েছে তার। এমনকি আওয়ামী লীগের দিরাই অফিসে তার যাতায়াত ছিল।

এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে দিরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর হোসেন কে ফোন দিলে তিনি বলেন আমি এ বিষয়ে কথা বলতে পারবো না। তবে যুগ্ম আহ্বয়ক বলতে পারবেন। কিছুক্ষণ পর দিরাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বয়ক পরিচয় দিয়ে ফোন দেন হুমায়ূন কবির তালুকদার। তিনি জানতে চান কেন আহ্বায়ব কে ফোন দেওয়া হয়েছে। তাকে বিস্তারিক বলার পর তিনি বলেন, আমাদের কাজে জেলা কমিটির নির্দেশনা রয়েছে যদি আওয়ামী লীগের মিটিং মিছিল এ বা গলায় ফুল দেওয়া নেওয়ার ছবি তাকে তাহলে তাদের এরিয়ে চলতে হবে। আপনি যেসব ছবির কথা বলছেন তা এ অন্তর্ভক্ত নয়।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা অফিযোগ তুলেছেন ত্যাগীদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর জন্য তারা বিভিন্ন বলয়কে দায়ী করেন। নিজের বলয় ঠিক রাখতে অনেকে যারা বিএনপির সাথে গত ১৫ বছর ছিলেন না তাদেরও সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন।