বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন
জামালগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে গুরুতর ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং বাকিদের জামালগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের বরাতে জানা যায়, সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর বাজারের বটতলায় ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এক সভার আয়োজন করা হয়। সভায় পদ বণ্টন নিয়ে আমিরুল ইসলাম ও আব্দুল মতিনের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক থেকে হাতাহাতি ও পরে মারামারিতে রূপ নেয়। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন।
পরদিন মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে ওই ঘটনার জের ধরে লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আমিরুল ও মতিন সমর্থকদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় ৩–৪ শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সংবাদ পেয়ে জামালগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন ও এসআই পঙ্কজ ঘোষ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সদর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিম উদ্দিন বলেন, “সোমবারের ঘটনার পর আমরা উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করি। কিন্তু আজ আবার সংঘর্ষের খবর পাই, তখন আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই।”
সদর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মো. বশির আহমদ বলেন, “ঘটনার বিষয়ে উপজেলা নেতৃবৃন্দসহ আমরা জরুরি বৈঠকে বসব। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাজ্জাদ মাহমুদ তালুকদার জানান, “আমি কমিটি গঠনের সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। প্রথমে কথা কাটাকাটি হলেও পরে মারামারি শুরু হয়। পরে আমি ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি সামাল দেই। কিন্তু আজ আবার সংঘর্ষ হয়।”
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শফিকুর রহমান বলেন, “দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করার যেকোনো চেষ্টাকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জামালগঞ্জ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শরীয়ত উল্লাহ জানান, “সংঘর্ষে গুরুতর আহত ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। জামালগঞ্জ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে আরও ৩৫ জনকে।”
জামালগঞ্জ থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, “বিএনপির ওয়ার্ড কমিটিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”